১৯৯৪ সালে বেলজিয়ামের অধ্যাপক গুন্টার পাউলি জাতিসংঘের এক অধিবেশনে ভবিষ্যতের অর্থনীতির রূপরেখা প্রণয়নের জন্য একটি টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব মডেল হিসেবে সুনীল অর্থনীতির ধারণা দেন। তিনি প্রথম ধারণা দেন পরিবেশবান্ধব উপায়ে সমুদ্রসীমা ব্যবহারের। পাওলি উদ্ভাবিত এ মডেল আজ বিশ্বব্যাপী ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
সুনীল অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমি (Blue Economy) হলো অর্থনীতির এমন একটি বিষয় যেখানে একটি দেশের সামুদ্রিক পরিবেশ কিংবা সামুদ্রিক সম্পদের সুষ্ঠ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষন নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই ‘সুনীল অর্থনীতি’ বা ‘ব্লু ইকোনমি’এর আরেক নাম ‘সমুদ্র অর্থনীতি’।
বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে সুনীল অর্থনীতি বা Blue Economy সংজ্ঞায় বলা হয়েছে- ‘সমুদ্রে যে পানি আছে এবং এর তলদেশে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে সেই সবধরনের সম্পদকে টেকসই উন্নয়নে ব্যবহার করাকেই Blue Economy বলে।’
সুনীল অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমি হচ্ছে সমুদ্রের সম্পদনির্ভর অর্থনীতি। সমুদ্রের বিশাল জলরাশি ও এর তলদেশের বিভিন্ন প্রকার সম্পদকে কাজে লাগানোর অর্থনীতি।
সমুদ্র থেকে আহরণকৃত যে সকল সম্পদ দেশের অর্থনীতিতে যুক্ত হয়, তা 'ব্লু -ইকোনমি' বা 'সুনীল অর্থনীতি'র পর্যায়ে পড়বে।
সমুদ্র পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উৎস। সমুদ্র থেকেই মাছ কিংবা মৎস্য সম্পদের মাধ্যমে খাবার চাহিদা ও অন্যান্য অর্থনৈতিক চাহিদা মেটায়; মানুষ এবং পন্য পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয় সমুদ্র। এছাড়াও সমুদ্র নানা ধরনের প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদ যেমন বালি, লবণ, কবাল্ট, গ্রাভেল, এবং কপার ইত্যাদির আধার হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং তেল ও গ্যাস আহরণ ক্ষেত্র হিসেবে সমুদ্র প্রয়োজন হয়। এসব উপাদান সমষ্টিকেই বলা হয় সুনীল অর্থনীতি (Blue Economy)।
সুনীল অর্থনীতির এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করা, দেশের সম্পদ বৃদ্ধি করা, সামাজিক পুঁজির সৃষ্টি করা, আয় বাড়ানো এবং সর্বোপরি পরিবেশে সঞ্চয়-বিনিয়োগের মধ্যে ভারসাম্য সৃষ্টি করা।